শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: রাজধানীর মিরপুর শিয়ালবাড়িতে অবস্থিত কেমিক্যাল গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও তা পুরোপুরি নির্বাপণ হয়নি।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণের তথ্য জানায় ফায়ার সার্ভিস। এদিন দুপুরেও গুদামের ভেতর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের মতো কুণ্ডলীকৃত সাদা ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন এখনও দাউ দাউ করে না জ্বললেও ভেতরে জমে থাকা রাসায়নিক থেকে নিঃসৃত ধোঁয়া মারাত্মকভাবে টক্সিক এবং প্রাণঘাতী হতে পারে।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান বলেন, কেমিক্যালের ধোঁয়া ও ক্লোরিন গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে, যা মানুষের ফুসফুস, হৃদযন্ত্র ও ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এটি বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরও জানান, সকালে ফায়ার সার্ভিসের একটি বিশেষ দল সুরক্ষা পোশাক (কেমিক্যাল স্যুট) পরে গুদামের প্রধান ফটক খুলতে সক্ষম হলেও গুদামের ভেতরে এখনও প্রবেশ সম্ভব হয়নি। সেখানে এখনও প্রচুর সাদা ধোঁয়া জমে আছে।
বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে কেমিক্যালের প্রকৃতি ও বিস্তৃতি বিশ্লেষণ করছে। তাদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে ফায়ার সার্ভিস।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিয়ালবাড়ি এলাকার আশপাশে ৩০০ মিটার পর্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের দরজা-জানালা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কয়েকটি পোশাক কারখানাও সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে শ্রমিকরা ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত না হন।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহজাহান সিরাজ বলেন, এই ধোঁয়ার সঙ্গে যে টক্সিক গ্যাস আছে, তা নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে এমন ক্ষতি করতে পারে যা তৎক্ষণাত বোঝা যাবে না। আমরা অনুরোধ করছি, কেউ যেন আশপাশে ভিড় না করে এবং সবাই যেন মাস্ক ব্যবহার করে।
জ্বলন্ত রাসায়নিকের তীব্র গন্ধে আশপাশের এলাকার মানুষ, গার্মেন্টস শ্রমিক ও দোকানদারদের অনেককেই এলাকা ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। ঘটনা কাভার করতে আসা সাংবাদিক ও উদ্ধারকর্মীরা মুখে মাস্ক পরে সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছেন।